শিখন ঘাটতি ও নিরাময়মূলক ব্যবস্থা
Learning deficits and remedial measures
শিখন ঘাটতি
শিক্ষা কার্যক্রমের লক্ষ্যে হল শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যোগ্যতা অর্জনে তাকে সহায়তা করা এবং শ্রেণী পাঠ আয়োজনের মাধ্যমেই এর সিংহভাগ অর্জন নিশ্চিত করা। শ্রেণী পাঠদান শিখন ঘাটতি সনাক্ত করার সর্বোত্তম ক্ষেত্র। প্রচলিত শিখন শেখানো কার্যাবলিতে কেবল শ্রেণী শিখনে পাঠদানের ওপরই গুরুত্ব প্রদান করা হয়। যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষাক্রমে পুরোপুরি শিখন নিশ্চিত করতে হলে ক্লাস রুমের বাইরেও পর্যবেক্ষণের সুযোগ দিতে হয়। এভাবে বিদ্যালয়ে বহিরাঙ্গনের কার্যক্রমে অংশগ্রহন করিয়ে বিভিন্ন কলাকৌশলের মাধ্যমে তাদের মধ্যে কারা পুরোপুরি শিখন অর্জন করেছে কারা অর্জন করতে পারেনি তা সনাক্ত করার জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ নানা কৌশল অবলম্বন করে থাকেন।
নিচে শিখন ঘাটতি সনাক্তকরণের প্রধান কৌশলগুলো উপস্থাপন করা হল:
- পাঠদানকালে পর্যবেক্ষণ করে;
- শিক্ষার্থীকে সরাসরি প্রশ্ন করে;
- দলগত কাজে অংশগ্রহণ করিয়ে কোন বিষয়ে বলতে দিয়ে;
- সর্বোপরি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্র্থীর শিখন ঘাটতি সনাক্ত করা হয়।
পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীর শিখন ঘাটতি সনাক্ত করা হলে তা দিয়ে পরবর্তী সময়ে নিরাময়মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিখন ঘাটতি পূরণ করার সময় পাওয়া যায় না। এজন্য শ্রেণী পাঠে এবং বিভিন্ন কাজকর্মে অংশগ্রহণ করিয়ে প্রশ্ন করে, বলতে দিয়ে, উত্তরের মান পরীক্ষা করে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থী সনাক্ত করা যায়। এই সনাক্তকৃত শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি এক রকম বা একই বিষয়ে হয় না। এ সকল শিখন ঘাটতির কারণ হিসেবে বলা যায়- শ্রেণীতে কারও অনুপস্থিতি, পাঠে কারও অমনোযোগিতা, বিষয়ের কাঠিন্য, পারিবারিক পরিবেশ, শিক্ষার প্রতিকুল পরিবেশ, দারিদ্র্য বিশেষভাবে উলে খযোগ্য। উপরিউক্ত কৌশলও ধাপগুলোর মাধ্যমে শিখন ঘাটতি শনাক্ত করা যায়।
শিখন ঘাটতি দূরীকরণে নিরাময়মূলক ব্যবস্থা
শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি শ্রেণীতে সাধারণত তিন ধরনের শিক্ষার্থী দেখা যায়। এরা হচ্ছে উচ্চ মেধা সম্পন্ন, মধ্যম মেধা ও ক্ষীণ মেধা সম্পন্ন শিক্ষার্থী। কিন্তু পুরোপুরি শিখন কৌশল উপরিউক্ত পদ্ধতির মাধ্যমে নিশ্চিত করা গেলে শিক্ষার্থীদের বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক শ্রেণীকরণের পার্থক্য কমে আসবে। বর্তমানে আমাদের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকবৃন্দ কার্যকরভাবে ভারাক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিখন ঘাটতি দূরীকরণে নিরাময়মূলক ব্যবস্থা করে থাকে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপস্থাপন করা হল:
- শিক্ষক শ্রেণী পাঠ এমনভাবে আয়োজন করেন যাতে কোন শিক্ষার্থী পিছিয়ে না পড়ে।
- পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীকে ছুটির পর অথবা সুবিধামত সময়ে তাকে শিখন ঘাটতি দূরীকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
- শ্রেণীর অপারগ শিশুদের মাধ্যমে শিখন ঘাটতি দূরীকরণের ব্যবস্থা করা। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখা দরকার যাতে অপারগ শিশু শ্রেণীর অপরাপর শিক্ষার্থীদের ওপর অনাকাঙ্খিত প্রভাব বিস্তার না করে।
- অভিভাবকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে আলোচনা করে শিক্ষার প্রতি তাদের উৎসাহ বৃদ্ধি করার জন্য তার সন্তানের প্রতি যত্ন নিতে অনুপ্রেরণা দান।
- এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা দানের জন্য উদ্বুদ্ধ করা।
মতামত দিন