নেটওয়ার্ক টপোলজী কি? ইহা কত প্রকার ও কি কি?
নেটওয়ার্ক টপোলজী কি? ইহা কত প্রকার ও কি কি?
নেটওয়ার্ক টপোলজি
কম্পিউটার
নেটওয়ার্কে একটি কম্পিউটারের সাথে অপর কম্পিউটারের সংযোগ ব্যবস্থা এবং সংযোগ এর
ধরণকে টপোলজি (Topology) বলে। তবে
নেটওয়ার্কের কম্পিউটারগুলোকে তার দিয়ে যুক্ত করলেই হয় না। তারের ভিতর দিয়ে
নির্বিঘ্নে ডেটা যাওয়া আসার জন্য যুক্তিনির্ভর সুনিয়ন্ত্রিত একটি পথের প্রয়োজন
আছে। নেটওয়ার্কের কম্পিউটারগুলোকে তারের মাধ্যমে যুক্ত করার যে নকশা এবং এর
পাশাপাশি সংযোগকারী তারের ভিতর দিয়ে ডেটা যাওয়া আসার জন্য যুক্তিনির্ভর পথের যে
পরিকল্পনা এ দু’য়ের সমন্বিত ধারণাকে বলা হয় নেটওয়ার্ক টপোলজি।
উইকিপিডিয়ার
তথ্য অনুসারে নেটওয়ার্ক টপোলজি হলো এটি নেটওয়ার্কের ফিজিক্যাল ডিভাইস বা কম্পোনেন্ট।
যেমন- ক্যাবল, পিসি, রাউটার ইত্যাদি যেভাবে নেটওয়ার্কে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত থাকে
তাকে বলা হয় টপোলজি। নেটওয়ার্ক টপোলজি মূলত নেটওয়ার্কের ফিজিক্যাল লেআউট
(Layout) বর্ণনা করে থাকে।
নেটওয়ার্ক টপোলজী প্রকার ও কি কি?
কম্পিউটার
নেটওয়ার্কে নিম্ন বর্ণিত ছয় ধরণের টপোলজি থাকে। যথা –
১। বাস নেটওয়ার্ক টপোলজি (Bus Network Topology)
২। স্টার নেটওয়ার্ক টপোলজি (Star Network Topology)
৩। রিং নেটওয়ার্ক টপোলজি (Ring Network Topology)
৪। ট্রি নেটওয়ার্ক টপোলজি (Tree Network Topology)
৫। মেশ নেটওয়ার্ক টপোলজি (Mesh Network Topology)
৬। হাইব্রিড নেটওয়ার্ক টপোলজি (Hybrid Network Topology)
বাস টপোলজির বৈশিষ্ট্য (সুবিধা ও অসুবিধা) লিখুন।
বাস নেটওয়ার্ক টপোলজি (Bus Network Topology)
যে ট্রপোলজিতে
একটি মূল তারের সাথে সবকয়টি কম্পিউটার সংযুক্ত থাকে তাকে বাস টপোলজি বলা হয়।বাস
টপোলজির প্রধান ক্যাবলটিকে বলা হয় ব্যাকবোন। সংযোগ লাইনকে সাধারণত বাস বলা হয়।
একটি কম্পিউটার অন্য কম্পিউটার নোডের সংযোগ লাইনের মাধ্যমে সংকেত পাঠায়। অন্যান্য
কম্পিউটারগুলো তাদের নোডে সেই সংকেত পরীক্ষা করে এবং কেবলমাত্র প্রাপক নোড সেই
সংকেত গ্রহণ করে।
বাস টপোলজি ব্যবহারের সুবিধাসমূহ:
১। এ নেটওয়ার্কের প্রধান সুবিধা হলো নেটওয়ার্ক খুব সাধারণ এবং ফিজিক্যাল
লাইনের সংখ্যা মাত্র একটি।
২। নেটওয়ার্কের ব্যাকবোন বা বাস সহজে সম্প্রসারণ করা যায়।
৩। এ সংগঠনটি সহজ সরল এবং ছোট আকারের নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা
সহজ।
৪। বাস নেটওয়ার্কের কোনো কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে অন্য কম্পিউটারে
কাজ করতে কোনো অসুবিধা হয় না। সহজেই কোনো কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হতে বিচ্ছিন্ন করা
সম্ভব।
৫। বাস নেটওয়ার্কে কম্পিউটার সংযুক্ত করতে কম তারের প্রয়োজন হয় ফলে
খরচ কম হয়।
বাস টপোলজি ব্যবহারের অসুবিধাসমূহ
১। মূল বাস নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক সিস্টেম অচল হয়ে
যায়।
২। এই টপোলজিতে ডেটা ট্রান্সমিশনের জন্য কোনো সমন্বয়ের ব্যবস্থা নেই। যেকোনো কম্পিউটার
যেকোনো সময়ে ডেটা ট্রান্সমিশন করতে পারে।
৩। নেটওয়ার্কে কম্পিউটার সংখ্যা বেশি হলে ডেটা ট্রান্সমিশন
বিঘ্নিত হয়।
৪। বাস টপোলজিতে সৃষ্ট সমস্যা নির্ণয় তুলনামূলক বেশ জটিল।
বাসের একটি মাত্র স্থানে সৃষ্ট ত্রুটি বা ব্রেক পুরো নেটওয়ার্ককে অচল করে দেয়।
৫। ডেটা ট্রান্সমিশনের গতি কম।
স্টার টপোলজির বৈশিষ্ট্য (সুবিধা ও অসুবিধা) লিখুন।
স্টার নেটওয়ার্ক টপোলজি (Star Network Topology)
স্টার
টপোলজি নেটওয়ার্কে সবগুলো কম্পিউটার একটি কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক ডিবাইসের (সুইচ ,
হাব ) সাথে সংযুক্ত থাকে।কম্পিউটার গুলো হাব (hub) বা সুইচ (switch) এর মাধ্যমে
একে অন্যের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে ও ডেটা আদান -প্রদান করে। কোনো কম্পিউটার ডেটা
ট্রান্সফার করতে চাইলে তা প্রথমে সব হাব অথবা সুইচে পাঠিয়ে দেয়। এরপর হাব বা সুইচ
সে সিগনালকে লক্ষ্যস্থানে পাঠিয়ে দেয়।
স্টার টপোলজির
সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক। বর্তমানে এই স্টার টপোলজির জনপ্রিয়তা
অনেক বেশি ব্যবহার।
স্টার টপোলজির সুবিধাসমূহ
১। নেটওয়ার্কের কোনো কম্পিউটার নষ্ট হলেও নেটওয়ার্কের বাকি
অংশের কাজের ব্যাঘাত হয় না।
২। একই নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা যায়।
৩। স্টার নেটওয়ার্কে কোনো কম্পিউটার যোগ করা বা বাদ দেয়া যায়, তাতে
কাজে কোনো বিগ্ন ঘটে না।
৪। কেন্দ্রীয়ভাবে নেটওয়ার্ক রক্ষণাবেক্ষণ বা সমস্যা নিরূপণ
সহজ।
স্টার টপোলজির অসুবিধাসমূহ
১। এ পদ্ধতিতে কেন্দ্রীয় কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ
নেটওয়ার্ক সিস্টেমই অচল হয়ে পড়ে।কারণ পুরো নেটওয়ার্ক হাবের মাধ্যমেই পরস্পরের
সঙ্গে যুক্ত থাকে।
২। স্টার টপোলজিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাবল ব্যবহৃত হয় বিধায়
এটি একটি ব্যয়বহুল পদ্ধতি।
মতামত দিন