অ্যাসাইনমেন্ট (Assignment) - Proshikkhon

অ্যাসাইনমেন্ট (Assignment)

Assignment : Characteristics, Rubric and How to write

অ্যাসাইনমেন্ট (Assignment) কী?

অ্যাসাইনমেন্ট (Assignment) বলতে সাধারণত কোনো বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন বুঝায়। সংশ্লিষ্ট বিষয় শিক্ষক কোন বিশেষ বিষয়বস্তু সম্পর্কে গভীরভাবে শিক্ষার্থীদের ধারণা যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে অ্যাসাইনমেন্ট (Assignment) প্রদান করে থাকেন। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় অ্যাসাইনমেন্ট (Assignment) টার্মটি বহুল আলোচিত সেই সাথে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং এ সম্পর্কে প্রত্যেক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সম্যক ধারণা রাখা আবশ্যক।

অ্যাসাইনমেন্ট (Assignment) এর বৈশিষ্ট্য

  • কোনো সৃজনশীল লেখা যথা-মৌলিক গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, নাট্যাংশ;
  • সিডিতে সংরক্ষিত নিজের আবৃত্তি;
  • পোস্টার/আর্ট পেপারে আঁকা কোনো চিত্র, ড্রইং বা স্কেচে-এর মাধ্যমে কোনো বিষয়ের চিত্রিত বর্ণনা;
  • প্রজেক্ট সম্পাদন করে তার প্রতিবেদন;
  • গণিত বিষয়ে কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য সৃজনশীল সমাধান করা বিষয়ে প্রতিবেদন;
  • গণিত বিষয়ে গণনার জন্য অথবা জ্যামিতির বিভিন্ন ধারণা প্রদানের জন্য সৃজনশীল উপকরণ তৈরি;
  • ইংরেজি বিষয়ে অ্যাসাইনমেন্ট প্রদানের ক্ষেত্রে ছবি দেখে গল্প লিখতে দিয়ে (২০০ শব্দ );
  • কোনো শহরের ছবি দেখে শহরের বর্ণনা লিখতে দিয়ে (২০০ শব্দ );
  • তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কীভাবে বলতে বা পড়তে শেখানো হয়েছে সে অভিজ্ঞতা লিখতে দিয়ে;
  • প্রাথমিক বিজ্ঞান বিষয়ে নিজ বাড়ি/পরিবেশের বাস্তুসংস্থান চিত্রসহ বর্ণনা করতে দিয়ে;
  • নিজ পরিবেশের উদ্ভিদের ছবি এঁকে উদ্ভিদের শ্রেণিবিন্যাসসহ একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে দিয়ে;
  • নিজ পরিবেশের ডোবা/পুকুরের পানিকে কীভাবে পানের উপযোগী করা যায় অর্থাৎ নিরাপদ পানি হিসেবে ব্যবহার করা যায় তা বর্ণনা করতে দিয়ে;
  • নিজস্ব পরিবেশে উৎপাদিত সুষম খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে একটি শিশুর যথাযথ পুষ্টি চাহিদা কীভাবে পূরণ করা যায় সে সম্পর্কে বিভিন্ন সারনিসহ একটি প্রতিবেদন তৈরি করা;
  • বাংলাদেশে ও বিশ্বপরিচয় পাঠদানের ক্ষেত্রে প্রধান প্রধান সমস্যা ও তার সমাধানের উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন করা;
  • বাংলাদেশের মানচিত্রে বিভিন্ন প্রকার অর্থকরী ফসলের এলাকা চিহ্নিত করে মানচিত্র অঙ্কন এবং প্রতিবেদন তৈরি করা;
  • বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যাবিষয়ক বিভিন্ন উপাত্ত তুলনা করে জনসংখ্যা রোধের বর্তমান চিত্রসহ কীভাবে আগামী ২০ বছরের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১% নামিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে প্রতিবেদন প্রণয়ন করা।

অ্যাসাইনমেন্ট কীভাবে প্রদান করা হবে?

  • ক্লাস শুরুর প্রথম থেকেই পঠিত কোনো বিষয়ে ছোট আকারের রচনামূলক লেখা অথবা নিজের লেখা গল্পের মাধ্যমে লেখা/বলা দক্ষতা উন্নয়নের জন্য একাধিকবার অনুশীলন করাতে হবে।
  • প্রথম থেকে তৃতীয় টার্মের মধ্যে বিষয়জ্ঞান এবং শিক্ষণবিজ্ঞানের ওপর অ্যাসাইনমেন্ট লেখার ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে অবশ্যই ইনস্ট্রাক্টরের ফিডব্যাক থাকতে হবে, যাতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ক্রমান্বয়ে উন্নয়ন সাধন করতে পারে।
  • অ্যাসাইনমেন্টের মান নির্ধারণ করতে অবশ্যই বিষয়টি সম্পর্কে শিক্ষার্থীর জ্ঞানের গভীরতা, উপলব্ধি করার ক্ষমতা, ভাষাজ্ঞান এবং লেখার দক্ষতা সম্পর্কে লিখিত মন্তব্য দিয়ে শিক্ষার্থীকে এ বিষয়গুলোর উন্নয়নে সহায়তা দিতে হবে।
  • অ্যাসাইনমেন্ট চূড়ান্তভাবে সম্পন্ন করার জন্য ২-৫ দিন সময় দিবেন। এক সপ্তাহের মধ্যে তা নিরীক্ষণ এবং পরিমার্জন শেষে পোর্টফোলিওতে সংরক্ষণ করা হবে। চূড়ান্ত অ্যাসাইনমেন্টে অবশ্যই সূত্রের উল্লেখ থাকতে হবে, তা বই ও লেখকের নাম হতে পারে, কোনো ব্যক্তির অভিজ্ঞতা থেকে নেয়া হলে সেই ব্যক্তির নাম ও ঠিকানা উল্লেখ থাকতে হবে।
  • ক্লাস শুরুর প্রথম থেকেই পঠিত কোনো বিষয়ে ছোট আকারের রচনামূলক লেখা অথবা নিজের লেখা গল্পের মাধ্যমে লেখা/বলা দক্ষতা উন্নয়নের জন্য একাধিকবার অনুশীলন করতে হবে।

অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয়

  • অ্যাসাইমেন্টের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর কোনো বিষয়ে ধারণা, তত্ত্ব বা তথ্য সম্পর্কে গভীর উপলব্ধি প্রকাশ পায়। [এ ক্ষেত্রে প্রদত্ত তথ্যের গভীরতা বিচার্য]
  • অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর চিন্তাশক্তি, ভাষাজ্ঞান অথবা বিষয়টি সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পায়। [এ ক্ষেত্রে চিন্তাশক্তির গভীরতা এবং ভাষাজ্ঞান বিচার্য]
  • অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করার জন্যে তথ্য/উপাত্ত সংগ্রহের প্রয়োজন হবে। তবে তা অবশ্যই প্রাসঙ্গিক হতে হবে। [সংগৃহীত তথ্য/তত্ত্বের সঠিকতা বিচার্য]
  • অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করার জন্য এক বা একাধিক উৎস ব্যবহার করতে হবে। সহপাঠী শিক্ষার্থী অথবা অন্য যেকোনো জানাশোনা ব্যক্তির সাথে আলোচনা করারও প্রয়োজন হয়। ইন্টারনেট থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয় ডাউনলোড করে তা ভালোভাবে পড়ে বিষয়টি উপলব্ধি করতে হবে। এ বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট বিষয় ইনস্ট্রাক্টর নিশ্চিত করবেন। (সূত্র উল্লেখ করতে হবে)

অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন

  • অ্যাসাইনমেন্ট প্রাথমিকভাবে গ্রেডের মাধ্যমে মূল্যায়িত হবে। উপরোল্লিখিত বিষয়গুলো মনে রেখে ইনস্ট্রাক্টর এ, বি, সি, ডি রেটিংয়ে মূল্যায়ন করবেন। এখানে, এ অর্থ অতি উত্তম, বি অর্থ উত্তম, সি অর্থ চলনসই, উন্নয়ন করা প্রয়োজন ‘ডি’ অর্থ ব্যাপক উন্নয়ন করা প্রয়োজন। (সি অথবা ডি গ্রেডপ্রাপ্ত অ্যাসাইনমেন্ট ইনস্ট্রাক্টরের পরামর্শ অনুসারে পুনরায় লিখে মূল্যায়নের জন্য জমা দিতে হবে।)
  • চূড়ান্ত অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের ক্ষেত্রে নির্ধারিত নম্বরের ভিত্তিতে নম্বর প্রদান করতে হবে। এ বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ইনস্ট্রাক্টরকে নিশ্চিত করতে হবে।
  • অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে অবশ্যই ইনস্ট্রাাক্টরের ফিডব্যাক থাকতে হবে যাতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী ক্রমান্বয়ে উন্নয়ন সাধন করতে পারে।
  • অ্যাসাইনমেন্ট যাচাই করার ক্ষেত্রে রুব্রিক (জঁনৎরপ) ব্যবহার করতে হবে। সে ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্ট প্রদান করার পূর্বেই সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর সাথে অ্যাসাইনমেন্টের কোন কোন দিকগুলোর উপর ভিত্তি করে গ্রেড প্রদান করা হবে সে সম্পর্কে শিক্ষার্থীকে লিখিত অথবা মৌখিকভাবে অবহিত করতে হবে।
  • প্রতিটি বিষয়ের প্রদত্ত অ্যাসাইনমেন্টগুলো পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুসারে মূল্যায়ন করা হবে। এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে অগ্রগতির মাত্রা লক্ষ করা হবে। উল্লেখ্য যে, অ্যাসাইনমেন্টের জন্য নির্ধারিত নম্বর রয়েছে।
  • অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ইনস্ট্রাক্টরগণকে অবশ্যই লক্ষ রাখতে হবে কোনো শিক্ষার্থী যাতে অপর কোনো লেখা থেকে অবিকল তথ্য প্রদান না করে। ইনস্ট্রাক্টরগণ এজন্য একেকজন শিক্ষার্থীকে এমন অ্যাসাইনমেন্ট দেবেন যা অন্যদের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হবে। এ ক্ষেত্রে বিষয়বস্তুর সাথে বাস্তব অভিজ্ঞতা সমন্বয় করে লিখতে দিলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
  • ৪র্থ টার্ম শেষে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ইনস্ট্রাক্টরগণ প্রাপ্ত নম্বর রেকর্ড করে উক্ত অ্যাসাইনমেন্টের একটি কপি সুপারিনটেনডেন্ট-এর নিকট জমা দেবেন।
  • ডিপিএড কোর্সের এক্সপ্রেসিভ আর্ট ছাড়া প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে প্রত্যেকটি কোর্সে একটি অ্যসাইমেন্ট দ্বিতীয় টার্মের
  • শুরু থেকে লিখতে দিতে হবে। এজন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সাথে আলোচনা করে বিষয় নির্বাচন করতে হবে। বিষয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে শিক্ষা দানের অভিজ্ঞতা যুক্ত করার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে।

অ্যাসাইনমেন্ট রুব্রিক (নমুনা)

এটি একটি উদাহরণ মাত্র। নিজে এ নমুনাটি অনুসরণ করে আরেকটি রুব্রিক তৈরি করা যেতে পারে।

মানদণ্ডবিষয় রুব্রিক-এর সূচকনির্দেশক নম্বর
ভূমিকা  বিষয়টির উদ্দেশ্য সঠিকভাবে বর্ণিত। বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা সংক্ষিপ্ত ও যথাযথভাবে বর্ণিত।
বিষয়বস্তুর ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিজস্ব মতামত বর্ণনা  উপযুক্ত তথ্যসহ বিষয়বস্তুটি যাথযথ ব্যাখাসহ বর্ণিত।বিষয়বস্তু ব্যাখা করার ক্ষেত্রে বিষয়জ্ঞান ও শিক্ষণ বিজ্ঞান সম্পর্কিত ধারণা প্রকাশিত।শিক্ষার্থীর লেখার স্টাইল, মতামত এবং যুক্তি উপস্থাপনের ক্ষেত্রে নিজস্বতার পরিচয় পাওয়া যায়।
লেখার মানভাষাগতমান (বানান, ব্যাকরণগত শুদ্ধতা) লেখা মান (ভাষারব্যবহার, প্রদত্ত তথ্যের বিশ্লেষণ ও গভীরতা)লেখার দৈর্ঘ্য (খুব ছোট অথবা খুব বড় হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়)।
উপসংহারউপস্থাপিত তথ্যের সার-সংক্ষেপ করা।নতুন তথ্যের উপস্থাপন।
 –মোট নম্বর
১৫

কেইস স্টাডি (Case Study) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে প্রেস করুন।

কর্মসহায়ক গবেষণা (Action Research) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে প্রেস করুন।

পাঠ সমীক্ষা (Lesson Study) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে প্রেস করুন।

এসাইনমেন্ট সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিও লেকচারটি শুনতে পারেন।

Comments (4)

[…] (Assignment) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে প্রেস […]

[…] (Assignment) সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে প্রেস […]

Thank you sir

বিষয়টি ক্লিয়ার জানতে পারলাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!