বি.এড

সামষ্টিক মূল্যায়ন

Summative evaluation

সামষ্টিক মূল্যায়ন কী?

সামষ্টিক মূল্যায়ন টার্মটি চূড়ান্ত বা প্রান্তিক মূল্যায়ন নামেও পরিচিত। একটি নির্দিষ্ট কোর্স শেষে শিক্ষার্থীর শিখন অর্জন চূড়ান্তভাবে যাচাই করার উদ্দেশ্যে যে মূল্যায়ন করা হয়, তাকেই সামষ্টিক মূল্যায়ন বলা হয়। এ মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিখন অর্জনের তুলনামূলক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানা যায়৷ চূড়ান্ত বা সামষ্টিক মূল্যায়ন একটি নিদিষ্ট সময়ের শেষেও নেওয়া যায়৷ কোন শিক্ষা পরিকল্পনা বা শিক্ষা কার্যক্রমের শেষে এসে যে মূল্যায়ন করা হয় তাকে সামষ্টিক মূল্যায়ন বলে।

সামষ্টিক মূল্যায়নের সংজ্ঞা

আর. এন প্যাটেলের এর মতে- “কোন কর্মকান্ড সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ও সর্বশেষ মূল্যায়ন বা সিদ্ধান্ত কে সামষ্টিক মূল্যায়ন বলে”।

এর প্রাথমিক উদ্দেশ্যসমূহ- গ্রেড নির্ণয়, শিক্ষণ দক্ষতার বিচার, শিক্ষাক্রমের পর্যালোচনা, ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনায় উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, শিক্ষার্থীর পারদর্শিতা সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন, শিক্ষণ পদ্ধতির কার্যকারিতা যাচাই ইত্যাদি ।

সামষ্টিক বা চূড়ান্ত মূল্যায়নের বৈশিষ্ট্য
  • সামষ্টিক মূল্যায়ন আনুষ্ঠানিকভাবে করা হয়।
  • শিক্ষার্থীর শিখন অগ্রগতি সম্পর্কে সার সংক্ষেপ পাওয়া যায়।
  • একটি নির্দিষ্ট সময় যেমন : বছর, ৩ মাস, ৬ মাস ইত্যাদি শেষে এ মূল্যায়ন করা হয়৷
  • এ মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নম্বর/মাকর্স প্রদান করে শিক্ষার্থীদের শিখনের তুলনামূলক চিত্র পাওয়া যায়৷
  • এ মূল্যায়নে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিতে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান অধিকার উল্লে­খ থাকে৷ কখনও গ্রেড দেওয়া হয়৷
  • এ মূল্যায়নে শিক্ষার্থীদের পাশ ও ফেল নির্ধারণ করা হয়৷ যারা পাশ করে তাদের কোন কোন ক্ষেত্রে সার্টিফিকেট ও পুরস্কার দেওয়া হয়৷
  • এ মূল্যায়নের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল শিক্ষার্থীর কৃতিত্ব বা পারদর্শিতা মূল্যায়ন৷
  • চূড়ান্ত মূল্যায়ন অভীক্ষা প্রয়োগ করে বা প্রজেক্টের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হয়।
  • এটি শিক্ষার্থী কর্তৃক নির্দিষ্ট কোন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের চূড়ান্ত অবস্থার মূল্যায়ন।
  সামষ্টিক বা চূড়ান্ত মূল্যায়নের সীমাবদ্ধতা

এ মূল্যায়ন অনেকক্ষেত্রে পাশনির্ভর পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হয়৷ ধারাবাহিক মূল্যায়ন ব্যতীত এ পদ্ধতি এককভাবে শিক্ষার্থীর যোগ্যতা অর্জন সফল না হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷দুর্বল শিক্ষার্থীদের নিরাময়মূলক ব্যবস্থা নিয়ে শিখন ঘাটতি দূরীকরণের সুযোগ থাকে না৷এ মুল্যায়নে শিক্ষার্থীর আচরণের যে দিকগুলো আসা উচিত তা হল জ্ঞান, দক্ষতা ও অনুভূতি৷ প্রচলিত চূড়ান্ত মূল্যায়নে সাধারণত জ্ঞান অর্জনমূলক আচরণ যাচাই করা হয়৷

সামষ্টিক বা চূড়ান্ত মূল্যায়নে ব্যবহৃত উপকরণ

১. লিখিত পরীক্ষা : যেমন-  রচনামূলক ও নৈর্ব্যক্তিক অভীক্ষা।

২. মৌখিক পরীক্ষা : যেমন- ভর্তি পরীক্ষা বা এ ধরণের কোন পরীক্ষা ও পাবলিক পরীক্ষা।

৩. ব্যবহারিক পরীক্ষা

৪. এছাড়াও অ্যাসাইনমেন্ট, টার্ম পেপার বা কিউমুলেটিভ রেকর্ড সামষ্টিক মূল্যায়নে ব্যবহৃত হতে পারে।

বাংলাদেশে প্রচলিত সামষ্টিক মূল্যায়ন

সাময়িক মূল্যায়ন:

প্রথম সাময়িক ও দ্বিতীয় সাময়িক কখন সম্পন্ন হয়?

৩-৪ মাস পরে প্রথম সাময়িক মূল্যায়ন হয়, ৬-৭ মাস পরে দ্বিতীয় সাময়িক মূল্যায়ন হয়৷

বার্ষিক মূল্যায়ন:

বছরের শেষে সমগ্র বইয়ের ওপর অনুষ্ঠিত হয৷

মূল্যায়নের স্থান: নিজ বিদ্যালয়

পরিচালনার দায়িত্ব:

বিদ্যালয় পর্যায়ে পরিচালনার দায়িত্ব প্রধান শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষকগণের এবং উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে আসছে, স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের বিষয় শিক্ষকগণ সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে থাকেন৷

উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক প্রণীত অভিন্ন প্রশ্ন ব্যবহার করে এ মুল্যায়ন করা হয়৷

ফলাফল:

বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্তৃক উত্তরপত্র মূল্যায়ন এবং প্রধান শিক্ষক উত্তরপত্র যাচাই করা হয়৷

ফলাফল প্রস্তুত করে শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক কর্তৃক অংশীজনের উপস্থিতিতে ফলাফল ঘোষণা করা হয়৷ ফলাফলে কৃতকার্য ও অকৃতকার্য এবং শ্রেণিতে মেধা তালিকায় স্থান ঘোষণা করা হয়৷

প্রাথমিক স্তরের সমাপনী পরীক্ষা কী?   

পাঁচ বছর মেয়াদি প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্তির পরে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষায় যোগ্যতা অর্জন যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে যে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, তা হল সমাপনী পরীক্ষা৷

কখন ও কোথায় অনুষ্ঠিত হয়?

পঞ্চম শ্রেণির শেষে নভেম্বর/ডিসেম্বর মাসে এ পরীক্ষা উপজেলা পর্যায়ে কয়েকটি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়৷

ধারাবাহিক বা গাঠনিক মূল্যায়ন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লিংকে প্রেস করুন।

মূল্যায়ন ও এর প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে এই লিংকে প্রেস করুন।

মতামত দিন

নিউজলেটার

থাকার জন্য আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন।