কম্পিউটার কী এবং এর বিভিন্ন অংশ

অধ্যায়-০১: আইসিটি; সেকশন: ১.১> তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (ICT) পরিচিতি, তথ্য প্রযুক্তি সাক্ষরতা

ক্লাস-০২: কম্পিউটার কী এবং এর বিভিন্ন অংশ, সিপিইউ, আইসিটি ডিভাইস, হার্ডওয়্যার, সফট্‌ওয়্যার, অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন সফট্ওয়্যার, কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করা।

ক্লাসের  আলোচিত বিষয়:

  • কম্পিউটার কী? একটি কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কী কী?
  • সিপিইও কী? মাইক্রেপ্রসেসর কয় ভাগে বিভক্ত ও কী কী?
  • ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইসের নাম লিখুন।
  • হার্ডওয়্যার কী? গুরুত্বপূর্ণ কতকগুলো হার্ডওয়্যারের নাম লিখুন।
  • তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ডিভাইসসমূহের নাম লিখুন।
  • সফটওয়্যার কী? সফট্‌ওয়্যার কয় প্রকার ও কী কী?
  • অপারেটিং সিস্টেম কী?
  • অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার কী?
  • কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করার পদ্ধতি লিখুন।

কম্পিউটার কী? একটি কম্পিউটারের কয়টি অংশ ও কী কী?

কম্পিউটার শব্দটি গ্রিক ‘Compute’ শব্দ হতে উৎপত্তি । Compute শব্দের অর্থ হিসাব বা গণনা করা। আর কম্পিউটার (computer) শব্দের অর্থ গণনাকারী যন্ত্র। কম্পিউটার একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্র। যাতে পূর্ব থেকে কিছু তথ্য দেয়া থাকে, যা ইনপুট ডিভাইস এর মাধ্যমে ইনপুটকৃত গাণিতিক ও যৌক্তিক ডাটা সমূহকে প্রসেসর দ্বারা প্রক্রিয়াকৃত সুনির্দিষ্ট আউটপুট প্রদান করে। কম্পিউটার সংগঠনের ভাগগুলো হচ্ছে এ রকম- প্রথমত কম্পিউটারের দুটি ভাগ: হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার।

হার্ডওয়্যারের চারটি অংশ:

  • সিপিইউ,
  • মেমোরি,
  • ইনপুট ও
  • আউটপুট ।

সিপিইউ:

CPU এর পূর্ণরূপ হলো Central Processing Unit যা বলতে মূলতঃ প্রসেসরকেই বোঝানো হয়। একটি সিপিইউ অনেকগুলো  ইন্ট্রিগ্রেটেড সাকিটের সমন্বয়ে তৈরী করা হয়। একে মাইক্রোপ্রসেসর ও বলা হয়। সিপিইউ’কে বলা যেতে পারে কম্পিউটারের মস্তিষ্ক। সিপিইউ’কে অনেক কিছুর সাথে সংযুক্ত থেকে কাজ করতে হয়। যেমন- মাদারবোর্ড, জিপিউ, এক্সটার্নাল স্টোরেজ, মাউস, কিবোর্ড, ইউএসবি পোর্ট ইত্যাদি। আর এই সম্পূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থাটি অনেকাংশেই সিপিইউ নিয়ন্ত্রণ করে এবং সিপিইউর ক্ষমতার উপর এর গতিশীলতা নির্ভর করে।

বর্তমানে মাইক্রোপ্রসেসরই হচ্ছে কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট। মাইক্রোপ্রসেসরের ভেতরের সংগঠনকে আবার তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন-

ক. নিয়ন্ত্রণ ইউনিট (Control Unit)

খ. গাণিতিক যুক্তি ইউনিট (rithmatic Logic Unit)

গ. স্মৃতি (Memory)

ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইসের নাম লিখুন।

ইনপুট ডিভাইস:

কম্পিউটারের ইনপুট প্রদানের জন্য বিভিন্ন ধরণের যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। এসব যন্ত্রকে বলা হয় ইনপুট ডিভাইস। কয়েকটি ইনপুট ডিভাইসের নাম:

  • কীবোর্ড,
  • মাউস,
  • স্ক্যানার,
  • ডিজিটাল ক্যামেরা,
  • ভিডিও ক্যামেরা,
  • গ্রাফিক্স ট্যাবলেট,
  • ওসিআর,
  • ওএমআর, ইত্যাদি।

আউটপুট ডিভাইস:

প্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর যে সকল যন্ত্রের সাহায্যে ফল পাওয়া যায় সে সকল যন্ত্রকে আউটপুট ডিভাইস বলা হয়। কয়েকটি আউটপুট ডিভাইস হলো:

  • মনিটর,
  • প্রিন্টার,
  • স্পীকার
  • এলসিডি প্যানেল ও
  • ভিডিও প্রজেক্টর ইত্যাদি।

হার্ডওয়্যার কী? গুরুত্বপূর্ণ কতকগুলো হার্ডওয়্যারের নাম লিখুন।

হার্ডওয়ার:

কম্পিউটারের ইনপুট ডিভাইস ও আউটপুট ডিভাইসসহ অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সকল যন্ত্রাংশকে একসাথে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার বলা হয়। তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দৃশ্যমান যা ধরা ও ছোঁয়া যায় এমন যন্ত্রাংশসমূহই হলো হার্ডওয়ার। Hardware is a physical part of computer system or electronic device. নানা ধরণের হার্ডওয়ার বা তথ্য প্রযুক্তি ডিভাইস রয়েছে।

কম্পিউটার হার্ডওয়্যার বা যন্ত্রাংশ:

অনেক ধরণের হার্ডওয়্যার বা কম্পিউটার যন্ত্রাংশ রয়েছে। সচারচর সেসকল যন্ত্রাংশ আমরা বেশি ব্যবহার করে থাকি তার একটি তালিকা নিম্নে উল্লেখ করা হল:

  • মাদারবোর্ড,
  • প্রসেসর,
  • মনিটর,
  • মাউস,
  • কী-বোর্ড,
  • প্রিন্টার,
  • স্ক্যানার,
  • ওয়েব ক্যামেরা,
  • পেন ড্রাইভ,
  • মডেম ইত্যাদি।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ডিভাইসসমূহের নাম লিখুন।

  • ডেস্কটপ কম্পিউটার,
  • ল্যাপটপ কম্পিউটার,
  • মোবাইল ফোন,
  • ডিজিটাল হোয়াইট বোর্ড,
  • প্রজেক্টর,
  • স্মার্ট টেলিভিশন,
  • ট্যাবলেট কম্পিউটার,
  • ফ্যাবলেট,
  • স্যাটেলাইট,
  • রেডিও,
  • ই-রিডার,
  • স্টোরেজ ডিভাইস যেমন-ফ্ল্যাশ ড্রাইভ,
  • ইনপুট ডিভাইস যেমন কীবোর্ড, মাউস এবং স্ক্যানার।
  • আউটপুট ডিভাইস যেমন প্রিন্টার এবং স্পিকার।

সফট্‌ওয়্যার কী? সফট্‌ওয়্যার কয় প্রকার ও কী কী?

Software বলতে একগুচ্ছ কম্পিউটার প্রোগ্রাম, কর্মপদ্ধতি ও ব্যবহারবিধিকে বোঝায়, যার সাহায্যে কম্পিউটারে কোনো নির্দিষ্ট প্রকারের কাজ সম্পাদন করা যায়। হার্ডওয়্যারকে সচল ও কাজের লক্ষ্যে পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন সফটওয়্যার। সফটওয়্যার ছাড়া শুধু হার্ডওয়্যার নিষ্প্রাণ দেহের মত। এই নিষ্প্রাণ দেহে প্রাণ সঞ্চার করে সফটওয়্যার।

সফট্‌ওয়্যারের প্রকারভেদ:

কম্পিউটার পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন সফটওয়্যার। সফটওয়্যার ছাড়া শুধু হার্ডওয়্যার নিষ্প্রাণ দেহের মত। এই নিষ্প্রাণ দেহে প্রাণ সঞ্চার করে সফটওয়্যার। সফটওয়্যার প্রধানত দুই প্রকার। যেমন-

১. অপারেটিং সিস্টেম বা সিস্টেম সফটওয়্যার এবং

২. অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার।

অপারেটিং সিস্টেম কী?

অপারেটিং সিস্টেম (Operating System) কে সিস্টেম সফটওয়্যার হিসেবেও অভিহিত করা হয়। অপারেটিং সিস্টেম বা সিস্টেম সফটওয়্যার ছাড়া কম্পিউটার চলতে পারে না। কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ কাজগুলো পরিচালনা করে অপারেটিং সিস্টেম। অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকশন প্রোগ্রামের মাঝখানে অবস্থান করে। বর্তমানে পিসির জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম হচ্ছে উইন্ডোজ সেভেন, উইন্ডোজ এইট ও উইন্ডোজ টেন। এছাড়া কেউ কেউ ম্যাক ওএস ও লিনাক্স অপারেটিং সিস্টেমের বিভিন্ন ভার্সনও ব্যবহার করে থাকেন।

অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার কী?

অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার বা কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন বলতে বিশেষ ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রামকে বোঝায় যা মানুষকে কোন বিশেষ ধরনের কাজ সম্পাদনে সহায়তা করে। অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রাম সাধারণত ব্যবহারকারীকে টেক্স্ট, সংখ্যা কিংবা ছবি নিয়ে বিভিন্ন কাজ করার সুযোগ দেয়। যেমন- ডকুমেন্ট সম্পাদনার জন্য মাইক্রোসফট ওয়ার্ড, ছবি এডিটের জন্য অ্যাডোবি ফটোশপ ইত্যাদি।

অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার এর উদাহরণ:

  • অফিস সফটওয়্যার: MS Word, MS Excel, MS Powerpoint,
  • গ্রাফিক্স সফটওয়্যার: Adobe Phothoshop, Adobe Illustrator,
  • মিডিয়া প্লেয়ার সফটওয়্যার: Winamp, MX Player, VLC,
  • নিরাপত্তা জনিত সফটওয়্যার: Kaspersky, Avast,
  • Internet ব্রাউজিং সফটওয়্যার: Mozila Firefox, Internet Explorer, Google Chrome,
  • ইমেইল আদান-প্রদান সফট্‌ওয়্যার: MS Outlook, Eudora, AOL Browser.

কম্পিউটার চালু ও বন্ধ করার পদ্ধতি লিখুন।

কম্পিউটার চালু করার পদ্ধতি:

  • পাওয়ার সাপ্লাই এর সুইচ অন করতে হবে;
  • ইউপিএস (যদি থাকে) এর সুইচ অন করতে হবে;
  • কম্পিউটারের পাওয়ার বাটনে চাপ দিতে হবে;
  • মনিটরের পাওয়ার সুইচ অন করতে হবে।

কম্পিউটার বন্ধ করার পদ্ধতি:

  • স্টার্ট মেনু থেকে টার্ন অফ কম্পিউটার সিলেক্ট করলে টার্ন অফ কম্পিউটার ডায়লগ বক্স আসবে। এরপর-

- টার্ন অফ (Turn Off) বোতামে ক্লিক করলে কম্পিউটার বন্ধ হয়ে যাবে,

- রিস্টার্ট (Restart) বোতামে ক্লিক করলে কম্পিউটার বন্ধ হয়ে পুনরায় চালু হবে।

কম্পিউটার পুরোপুরি বন্ধ হলে পাওয়ার সাপ্লাই, ইউপিএস ও মনিটরের পাওয়ার বাটন বন্ধ (Off) করতে হবে।

মতামত দিন

নিউজলেটার

থাকার জন্য আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন।