শিক্ষার্থীর আচরণগত ভিন্নতা

শিক্ষার্থীর আচরণগত ভিন্নতা

আলোচিত বিষয়:

  • শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণগত ভিন্নতার ধরণ
  • শিক্ষার্থীদের জেন্ডার ভিন্নতার কারণে কী কী সমস্যা তৈরি হয়?
  • শিক্ষার্থীদের জেন্ডার ভিন্নতায় সৃষ্ট সমস্যা দূরীকরণে বিদ্যালয়ে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে আপনি মনে করেন- তা বর্ণনা দিন।
  • শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতি, রীতিনীতি, আর্থ-সামাজিক অবস্থাগত ভিন্নতা বজায় রেখে পাঠদানের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে আপনার ধারণা ব্যক্ত করুন।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণগত ভিন্নতার ধরণ

শ্রেনিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরণের আচরণ পরিলক্ষিত হয়। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের কাজে যেকোন ধরনের অসহযোগিতামূলক আচরণই সমস্যামূলক আচরণ। শ্রেণিকক্ষে কিছু শিক্ষার্থী আছে যারা তাদের আচরণের মাধ্যমে শ্রেণিকক্ষে শিখন শেখানোর কাজে সমস্যা তৈরি করে। শিখন-শেখানো কাজের সুবিধার্ধে এ ধরণের আচরণগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকা আবশ্যক। সেগুলো হলো:

  • শিক্ষার্থীদের জেন্ডার ভিন্নতা,
  •  শিক্ষার্থীদের ভাষাগত ভিন্নতা,
  • শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতি, রীতিনীতি, আর্থ-সামাজিক অবস্থাগত ভিন্নতা।

শিক্ষার্থীদের জেন্ডার ভিন্নতার কারণে কী কী সমস্যা তৈরি হয়?
শিক্ষার্থীদের জেন্ডার ভিন্নতার কারণে বিদ্যালয়ে তাদের অংশগ্রহণ ও শিখনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সমস্যা হয়। যেমন-

  • মেয়েদের প্রতি শিক্ষক বা সহপাঠী ছেলেদের কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের গালিগালাজ ও অশালীন মন্তব্য,
  • অশালীন আকার-ইঙ্গিত ও যৌন নিপীড়ন ইত্যাদি বিদ্যালয়ে অংশগ্রহণ ও শিখন শেখানোর কাজে অংশগ্রহণে বাধা তৈরি করে।
  • শ্রেণিকক্ষেও বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজে মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের অধিক অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া ও পক্ষপাত করার ফলে মেয়েরা শিখন শেখানো কার্যক্রমে অংশগ্রহণে পিছিয়ে পড়ে।
  • স্বাস্থ্যসম্মত এবং আলাদা টয়লেট ব্যবস্থা, বিশ্রাম বা অবসর কাটানোর জন্য আলাদা কমনরুমের ব্যবস্থা না থাকলেও তা শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে শিখনে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে কাজ করে।

শিক্ষার্থীদের জেন্ডার ভিন্নতায় সৃষ্ট সমস্যা দূরীকরণে বিদ্যালয়ে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত বলে আপনি মনে করেন- তা বর্ণনা দিন।

জেন্ডার ভিন্নতায় সৃষ্ট সমস্যা দূরীকরণে যে সকল পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা হলো:

  • শ্রেণিকক্ষে ও শ্রেণিকক্ষের বাইরের বিভিন্ন কাজে নারী বা পুরুষ বাচক বৈষম্য যাতে তৈরি না হয় এমনভাবে পরিবেশ তৈরি করা।
  • সকল ধরণের কর্মকান্ডে উভয়ের সমান অধিকার ও সমান সুযোগ থাকা।
  • বৈষম্যপূর্ণ ও জেন্ডার সংবেদনশীল পরিবেশ যাতে সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা।
  • পৃথক টয়লেট এবং কমনরুমের ব্যবস্থা থাকা।
  • বিদ্যালয়ে এবং এর বাইরে যৌন নিপীড়ন এবং অশালীন ইঙ্গিতমূলক আচরণমুক্ত পরিবেশ থাকা।


শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতি, রীতিনীতি, আর্থ-সামাজিক অবস্থাগত ভিন্নতা বজায় রেখে পাঠদানের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে সে সম্পর্কে আপনার ধারণা ব্যক্ত করুন।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের বৈচিত্র্যপূর্ণ অবস্থাগত ভিন্নতা অনেক সময় পাঠদান কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করে। তাদের সংস্কৃতিগত ভিন্নতা, রীতিনীতি ও আচার-আচরণগত ভিন্নতার কারণে বৈষম্য তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে শ্রেণিকক্ষে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেন শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতিগত বা আর্থ-সামাজিক অবস্থাগত ভিন্নতা সত্ত্বেও শ্রেণিকক্ষে কোন ধরনের বৈষম্য তৈরি করা না হয়। শিক্ষার্থীদের অবস্থাগত ভিন্নতা মাথায় রেখে পাঠদানে জন্য বিভিন্ন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে। সেগুলো হলো:

  • ভিন্নতাই শক্তি এমন ধারণা বিদ্যালয়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনুপ্রবেশ ঘটানো।
  • আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি ভিন্নতার কারণে কোন ধরনের বৈষম্য না করে সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখা ও সমান সুযোগ প্রদান করা।
  • সকল ধরণের বৈষম্য নীতি বর্জন করা।
  • প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মধ্যে তাদের নিজের সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা গঠনে সহায়তা করা।
  • কাউকে কোন ধরনের হেয় না করা বা কারো প্রতি কোন ধরনের পক্ষপাতমূলক আচরণ না করা।
  • পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া, প্রয়োজনে তাদের বাড়ীতে গিয়ে মাঝে মধ্যে খোঁজ-খবর রাখা।
  • কিছু ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অবস্থানগত ভিন্নতা মাথায় রেখে বাড়ীর কাজ প্রদান করা।
  • শিক্ষার্থীদের ভালো কাজকে প্রশংসা করা এবং মন্দ কাজকে নিরুৎসাহিত করা।


মতামত দিন

নিউজলেটার

থাকার জন্য আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন।