শ্রেণিকক্ষে অনুকূল পরিবেশ তৈরির কৌশল

শ্রেণিকক্ষের অনুকূল পরিবেশ 
  • শ্রেণিকক্ষে অনুকূল পরিবেশ তৈরির কৌশল লিখুন।
  • শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন? অনুকুল শ্রেণি পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলো আলোচনা করুন।
শ্রেণিকক্ষে অনুকূল পরিবেশ তৈরির কৌশল লিখুন।

কার্যকর শ্রেণি ব্যবস্থাপনার জন্য একটি অনুকূল শ্রেণি পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা দরকার। শ্রেণিকক্ষে অনুকূল শ্রেণি পরিবেশ সৃষ্টিতে কিছু সাধারণ কৌশল অবলম্বন করা যায়। যেমন-

  • সম্পর্ক উন্নয়ন করা
  • আচরণ বিধি প্রতিষ্ঠা
  • যোগাযোগ পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা
  • জেন্ডার ও জাতিগত বৈষম্য দূর করা
  • বিশেষ চাহিদার প্রতি সাড়া দেওয়া

শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন? অনুকুল শ্রেণি পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রগুলো আলোচনা করুন।

শিক্ষকতা পেশাটি চ্যালেঞ্জপূর্ণ। বিদ্যালয়কেন্দ্রিক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্য একজন শিক্ষককে নানা ধরণের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়। পাঠদানের পরিবেশ সবসময় অনুকূল নাও থাকতে পারে। এজন্য অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করে নিতে হয়। তবে সবধরণের কাজে ভাল ফলাফল পেতে শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকের সম্পর্ক ভাল রাখতে হয়। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক যত ভাল হবে কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন তত সহজ হবে। সুতরাং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে সু-সম্পর্ক থাকা উচিত। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে শিখন-শেখানো কার্যক্রম অধিকতর ফলপ্রসূ হয়।

অনুকূল শ্রেণি পরিবেশ প্রতিষ্ঠার জন্য সম্পর্ক উন্নয়ন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ৩ ধরনের দক্ষতার প্রতি মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। যথা:

  ১. সাধারণ মানবীয় সম্পর্ক উন্নয়ন দক্ষতা,

  ২. শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন দক্ষতা এবং

  ৩. অভিভাবকদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন দক্ষতা। নিম্নে প্রত্যেকটি দক্ষতা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. সাধারণ মানবীয় সম্পর্ক উন্নয়ন দক্ষতা

  • বন্ধুত্বভাবাপন্নতা: শিক্ষার্থীদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন মনোভাব পোষণ করা। এমনকি যে শিক্ষার্থী বিরক্ত করে তার সাথেও হাসিমুখে এবং ভদ্রভাবে কথা বলা।
  • ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি: সমস্যা নিয়ে দোদুল্যমান না থেকে বা সমস্যাকে দীর্ঘায়িত না করে সমাধান খোঁজা।
  • শোনার সামর্থ্য: মন দিয়ে শিক্ষার্থীদের কথা শোনা এবং বোঝানো যে তাদের মতামত মূল্যায়ন করা হচ্ছে।
  • সত্যিকারের প্রশংসা করার সামর্থ্য: ভালো কাজ বা পারদর্শিতার জন্য সত্যিকার প্রশংসা করা।

২. শিক্ষার্থীদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন দক্ষতা

  • নিয়মিত মনোযোগ দেয়া: শিক্ষার্থীদের প্রতি মনোযোগী হওয়া। তাদের সাথে ঘনঘন তবে সংক্ষেপে কথা বলা, তাদের খোঁজখবর করা।
  • সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ: শিক্ষার্থীদের প্রতি সমর্থন ও উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে সম্পর্ক সুদৃঢ় করা। দেখা হলে তাদের খোঁজখবর করা।
  • নিয়মিত সহায়তাদান: শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়মিত সহায়তাদানের ইচ্ছে রাখা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান।
  • শিষ্টাচার ও সুআচরণের মডেল উপস্থাপন: শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যেসব আচরণ যেমন- শিষ্টাচার, ভালো আচরণ ইত্যাদি প্রত্যাশা করা হয় তা নিজের ক্ষেত্রে অনুশীলন করা এবং শিক্ষার্থীদের সামনে এসব ক্ষেত্রে নিজেকে মডেল হিসেবে উপস্থাপন করা।

৩. অভিভাবকদের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন দক্ষতা

  • নিয়মিত যোগাযোগ: শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ। এক্ষেত্রে পথেঘাটে দেখা হলে, বাড়ি পরিদর্শনে গিয়ে বা বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে উপস্থিত হলে সন্তানদের বিষয় নিয়ে তাদের সাথে কথা বলা যায়। ক্ষেত্রবিশেষে চিঠি দিয়ে বা ফোন করেও যোগাযোগ হতে পারে।
  • স্পষ্টভাবে যোগাযোগ: যোগাযোগের ক্ষেত্রে যে বিষয় তাদের জানানো হবে তা সহজ ও স্পষ্ট হওয়া।
  • প্রত্যাশা সম্পর্কে স্পষ্টভাবে বলা: শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক অগ্রগতির উদ্দেশ্যে তাদের অভিভাবকদের কাছ থেকে শিক্ষক হিসেবে নিজের প্রত্যাশা কী তা স্পষ্টভাবে জানানো।
  • ইতিবাচক বিষয়কে অগ্রাধিকার: শিক্ষার্থীদের সীমাবদ্ধতার প্রতি অনেক বেশি গুরুত্ব না দিয়ে তাদের অগ্রগতি অর্থাৎ শিক্ষার্থী কী পারছে, সহায়তা পেলে আরও কী অগ্রগতি হতে পারে, কোন ক্ষেত্রে এবং কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন ইত্যাদির প্রতি গুরুত্ব দেয়া।


মতামত দিন

নিউজলেটার

থাকার জন্য আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন।