শ্রেণি ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার্থীদের আচরণ

শ্রেণি ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষার্থীদের আচরণ

  • শ্রেণি ব্যবস্থাপনা কাকে বলে?
  • শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণ কয় প্রকার ও কী কী?
  • শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণে প্রভাব বিস্তারকারী পরিবেশগত উপাদানসমূহের ধারণা দিন।
  • শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের যে সকল অসহযোগিতামূলক আচরণ লক্ষ্য করা যায় সেগুলোর বর্ণনা দিন।
  • বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যার ধরনসমূহ উল্লেখ করুন।

শ্রেণি ব্যবস্থাপনা কাকে বলে?
শ্রেণি ব্যবস্থাপনা:

শ্রেণি ব্যবস্থাপনা পাঠদান কার্যক্রমের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুষ্ঠুভাবে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার সুবিধার্থে পাঠদানের সহিত জড়িত বিভিন্ন কার্যাবলিকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ করাকে বলা হয় শ্রেণি ব্যবস্থাপনা। এর ফলে শিখন-শেখানো কার্যক্রমের মান উন্নয়ন করা যায়। অন্যভাবে বলা যায় বাধাহীনভাবে পরিকল্পিত কাজগুলো সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য নিয়ন্ত্রণমূলক যে কৌশল অবলম্বন করা হয়, তাকেই শ্রেণি ব্যবস্থাপনা বলে। যেমন-শিক্ষার্থীদের অসদাচরণ নিয়ন্ত্রণ করে সুসম্পর্ক তৈরি করা।

শ্রেণি ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য:

  • শিক্ষার্থীদের অসহযোগিতামূলক আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে তাদের দিয়ে সহযোগিতামূলক আচরণ করানো;
  • শিক্ষার্থীদের কার্যকর শিখনের সুযোগ তৈরি করা,
  • শিক্ষার্থীদের অসদাচরণ নিয়ন্ত্রণ ও তাদের সাথে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠা,
  • শ্রেণিকক্ষ পরিচালনার কিছু নীতি প্রতিষ্ঠা করা,
  • শ্রেণিকক্ষে কার্যকর যোগাযোগ কৌশল ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন কাজে সক্রিয় রাখা ইত্যাদি।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণ কয় প্রকার ও কী কী?

পাঠদানের জন্যে একটি অন্যতম বিষয় হলো শিক্ষার্থীদের আচরণ। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণ দু’ ধরনের হয়। যথা:

১. সহযোগিতামূলক: শিক্ষার্থীরা যখন শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসারে বিভিন্ন কাজে যুক্ত হয় তখন তা সহযোগিতামূলক আচরণ।

২. অসহযোগিতামূলক আচরণ। শিক্ষার্থীরা যখন শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসরণ করে না এবং শ্রেণিকক্ষের কাজের ব্যাঘাত ঘটায় এমন আচরণ করে তখন তা অসহযোগিতামূলক আচরণ।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণে প্রভাব বিস্তারকারী পরিবেশগত উপাদানসমূহের ধারণা দিন।

বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আচরণ শ্রেণিকক্ষের পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়। এক্ষেত্রে ৩ ধরনের উপাদানের প্রভাব দেখা যায়। যথা:

১. ভৌত উপাদান: চেয়ার, টেবিল তথা বসার ব্যবস্থা, কোলাহল বা আশেপাশের শব্দের মাত্রা, কাজ ও চলাফেরার জন্য জায়গার পরিমাণ, তাপমাত্রা, আলোবাতাস ইত্যাদি।

২. সামাজিক উপাদান: শিক্ষার্থীরা একক বা দলগতভাবে কাজ করে, পরস্পরের প্রতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার, দল গঠনের প্রকৃতি ও আকার, শিক্ষার্থীদের আচরণ ইত্যাদি।

৩. শিক্ষাবিষয়ক উপাদান: শিক্ষকের শিখন শেখানোর পদ্ধতি, শিক্ষকের গ্রহণ বা বর্জন, প্রয়োজনীয় শিক্ষাবিষয়ক কাজের ধরণ,প্রয়োজনীয় ক্রিয়াকলাপের ধরণ ইত্যাদি।

এসকল উপাদানের বাইরেও শিশুদের পারিবারিক বৈশিষ্ট্য, সঙ্গীদলের বৈশিষ্ট্য, সহাপাঠীদের বৈশিষ্ট্য, বিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য ইত্যাদি নানা ধরণের উপাদান শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের আচরণকে প্রভাবিত করে।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের যে সকল অসহযোগিতামূলক আচরণ লক্ষ্য করা যায় সেগুলোর বর্ণনা দিন।
শিশুরা শ্রেণিকক্ষে যেসব অসহযোগিতামূলক আচরণ করতে পারে তা নিম্নরূপ:

  • শিক্ষকের শিখন শেখানো কাজে অমনোযোগী থাকা ও কোন ধরনের সাড়া না দেয়া
  • শিক্ষকের নির্দেশ অমান্য করা ও নিজেদের মধ্যে কথা বলা।
  • সহপাঠীদের প্রতি শারীরিক ও মৌখিক আক্রমণ বা হিংস্র আচরণ
  • বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কাজ, যেমন- প্রতারণা, মিথ্যা বলা ইত্যাদি
  • শ্রেণিকক্ষে হৈ চৈ করা, জিনিসপত্র ছোঁড়াছোঁড়ি করা ইত্যাদি
  • ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতির শিশুদের আচরণগত ভিন্নতা ও অনৈক্য।

বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যার ধরনসমূহ উল্লেখ করুন।

শিক্ষকতা মহান পেশা হলেও কিছু সমস্যাও মোকাবেলা করতে হয়। বাংলাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের মধ্যে কিছু সাধারণ সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। শিক্ষার্থীদের আচরণগত সমস্যাগুলো নিম্নরূপ:

  • আক্রমণাত্মক
  • অসৌজন্যমূলক আচরণ
  • বিশৃ‫খল আচরণ
  • অনর্থক অভিযোগ করা
  • অনর্থক শ্রেণিকক্ষ ত্যাগ করা
  • চুরি করা,
  • অন্যমনষ্ক থাকা,
  • খারাপ ভাষা ব্যবহার করা ইত্যাদি।

মতামত দিন

নিউজলেটার

থাকার জন্য আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন।