Session-08: Color and its types
আলোচ্য বিষয়:
- রং বলতে কি বুঝায়? বিভিন্ন স্তরের রংয়ের বর্ননা দিন। অথবা, তরঙ্গের তারতম্য অনুসারে রংকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী উদাহরণ দিন।
- রংয়ের বৈশিষ্ট্য বা গুণ কী কী?
- প্রকৃতিতে পাওয়া যায় এমন কিছু রংয়ের ধারণা দিন।
রং বলতে কি বুঝায়? বিভিন্ন স্তরের রংয়ের বর্ণনা দিন।
অথবা, তরঙ্গের তারতম্য অনুসারে রংকে কয়ভাগে ভাগ করা যায় ও কী কী উদাহরণ দিন।
উইকিপিডিয়ার মতে- রঙ বলতে রঞ্জক পদার্থবিশিষ্ট এক ধরনের তরল বা অর্ধতরল মিশ্রণকে বোঝায় যা কোনও পৃষ্ঠতলের উপর পাতলা স্তরের মত প্রয়োগ করা হয়, যা পরে শুকিয়ে ঐ পৃষ্ঠের উপরে একটি স্থায়ী শক্ত রঙিন প্রলেপে পরিণত হয়।
নিউটন পরীক্ষা করে দেখিয়েছিলেন, যদিও সূর্যালোক দৃশ্যত বর্ণ-বিভাগহীন, কিন্তু মূলত তা সাতটি বর্ণ রশ্মির সম্মিলন। যাকে আমরা বাংলায় বলি ‘বেনীআসহকলা’ আর ইংরেজিতে ‘VIBGYOR’। বেগুনী, নীল, আসমানী, সবুজ, হলুদ, কমলা এবং লাল। যে বস্তুতে সব কটি রং-এর প্রতিক্ষেপ ঘটে-তা সাদা দেখায়, আবার যে-বস্তু সব কটি একসঙ্গে শোষণ করে তা কালো দেখায়। শোষণের ফলে আলোর অভাব ঘটে, তাই কালো হচ্ছে সম্পূর্ণ অন্ধকার।
বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পী মতিস রং সম্পর্কে বলেছেন যে, রং-এর মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে চিত্রের প্রকাশময়তাকে যতটা সম্ভব সফল করা। রংয়ের সাথে আলোর নিবিঢ় সম্পর্ক রয়েছে। আলোর মধ্যেই যতো রং-এর খেলা। তাই আলোর পরিবর্তনের সঙ্গে রং-এর পরিবর্তন ঘটে।
রংয়ের তারতম্যের উপর নির্ভর করে রংকে ৩ ভাগে ভাগ করা হয়। যথা:
১. প্রথম স্তরের রং বা মৌলিক রং (Primary Colour),
২. দ্বিতীয় স্তরের রং বা মাধ্যমিক রং (Secondary Colour), এবং
৩. তৃতীয় স্তরের রং বা মিশ্র রং (Tertiary Colour)।
১. প্রথম স্তরের রং বা মৌলিক রং (Primary Colour):
যে রং অন্য কোন দুই বা ততোধিক রংয়ের মিশ্রণে তৈরি হয় না, তাকে প্রথম স্তরের রং বা মৌলিক রং বলা হয়। মৌলিক রং তিনটি। যেমন-
(১) লাল, (২) নীল এবং (৩) হলুদ।
২. দ্বিতীয় স্তরের রং বা মাধ্যমিক রং (Secondary Colour):
যে রং শুধুমাত্র দুইটি মৌলিক রংঙের মিশ্রণে তৈরি হয়, তাকে দ্বিতীয় স্তরের রং বা মাধ্যমিক রং বলা হয়। মাধ্যমিক রং তিনটি। যেমন-
(১) কমলা = লাল + হলুদ ।
(২) বেগুণী = নীল + লাল ।
(৩) সবুজ = হলুদ + নীল ।
৩. তৃতীয় স্তরের রং বা মিশ্র রং (Tertiary Colour):
প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরের রংয়ের মিশ্রণে যে রং তৈরি করা হয়, তাকে তৃতীয় স্তরের রং বা মিশ্র রং বলা হয়। মিশ্র রং অগণিত যার কোন সীমা নেই । যেমন-
- কমলা কমলা + হলুদ = কনক বা খাঁটি সোনার রং ।
- কমলা + লাল = ইটের রং ।
- লাল + বেগুণী = আলতা রং ।
- নীল + বেগুণী = ধুসর রং ।
সাদা রং: সাদা রং হলো সব রংয়ের সমষ্টি। অর্থাৎ সাদা রংয়ে সব রং বিদ্যমান থাকে।
কালো রং: কালো রং হলো সব রংয়ের অনুপস্থিতি। অর্থাৎ কালো রংয়ে কোন রং থাকে না।
রংয়ের বৈশিষ্ট্য বা গুণ কী কী?
রংয়ের বৈচিত্র্যতার জন্যেই পৃথিবীটা এত রঙীন মনে হয়। জগৎ জুড়ে রংয়ের খেলা। আর চিত্রাঙ্কনের ক্ষেত্রে তো রং নিয়েই সবকিছু। শিল্পীরা মূলত রংয়ের গুণাগুণ নিয়েই সাধনা করে। প্রত্যেকটি রং এর মধ্যে তিনটি গুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকে। সেগুলো হলো:
১. বর্ণ (Hue):
বর্ণের অর্থ হচ্ছে রং এর সমাবেশ যার ফলে একটি রংকে অন্য রং থেকে পৃথক করা যায়। যেমন- লাল, হলুদ ও নীল।
২. গাঢ়তা ও লঘুতা (Value):
চিত্রাঙ্কনের সময় বিষয়বস্তুকে ফুটিয়ে তোলার জন্য রং কখনো গাঢ় এবং কখনোবা হালকা করে দেখাতে হয়।
৩. বর্ণের উজ্জ্বলতা ও অনুজ্জলতা (Intensity):
এটিও অঙ্কনের প্রয়োজন অনুসারে কোন সময় উজ্জ্বল আবার কোন সময় অনুজ্জ্বল করা হয়।
প্রকৃতিতে পাওয়া যায় এমন কিছু রংয়ের ধারণা দিন।
প্রাকৃতিক রং:
শিশুরা রং খুব ভালবাসে। প্রকৃতিতে ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন রং যেগুলো দিয়ে খুব সহজেই শিশুদের বিনামূল্যে রং সম্পর্কে ধারণা দেওয়া যেতে পারে। যেমন-
হলুদ রং: কাঁচা বা শুকনো হলুদ থেকে পাওয়া যায়।
সবুজ রং: সীম পাতা বা গাঁদা ফুলের পাতাসহ যেকোন সবুজ পাতা থেকে পাওয়া যায়।
বেগুণী রং: পাকা পূঁই ফল থেকে পাওয়া যায়।
কমলা রং: মেহেদী পাতা ও শিউলী ফুল থেকে পাওয়া যায়।
কালো রং: কাঠ পোড়ানো কয়লা থেকে পাওয়া যায়।
খয়েরী রং: খয়ের গাছের ছাল, কচু গাছের রস, কাঁচা গাব ফল ও ডেউয়া গাছের ছাল থেকে পাওয়া যায়।