বয়সের তারতম্য অনুসারে শিশু চিত্রাংকন
শিশু চিত্রাংকন ও এর প্রকারভেদ
বয়সের তারতম্য অনুসারে শিশু চিত্রাংকন
বয়সের তারতম্য অনুসারে শিশু অঙ্কনকে চারটি ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:
- হিজিবিজি স্তর (Scribbling stage)
- সাংকেতিক স্তর (Symbolic stage)
- অর্ধবাস্তব স্তর (Pseudo-realistic stage)
- বাস্তবতার স্তর (Realistic stage)
শিশু অঙ্কনের ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং মজার স্তর। শিশুরা আঁকতে গিয়ে এলোমেলো আঁকিঝুকির মাধ্যমে তার কল্পনার বিষয়কে প্রকাশ করতে চায়। শৃঙ্খলাবিহীনভাবে নানান ধরনের রেখার সাহায্যে ছবি আঁকে বলে এ স্তরকে হিজিবিজি স্তর বলে। প্রাক-প্রাথমিক অবস্থায় শিশুরা এ ছবিগুলো এঁকে থাকে। ৩ থেকে ৫+ বছরের শিশুরা এই স্তরের মধ্যে পড়ে।
২। সাংকেতিক স্তর
যদি কোন শিশুকে একটি মোরগ এর ছবি আঁকতে বলা হয়, তাহলে প্রথমে সে একটি শূন্য দিয়ে একটি পেট এঁকে তার উপর আরেকটি ছোট শূন্য দিয়ে মাথা এঁকে বড় শূন্যটির নিচে দুটি সরল রেখা দিয়ে পা এঁকে ফেলবে। প্রকাশভঙ্গির এ ধারাকে Schema বলে। শিশুর অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্কিমা পরিবর্তন হয়।
৯ থেকে ১১+ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুরা অর্ধবাস্তবতার উপর ভিত্তি করে ছবি এঁকে থাকে। এই বয়সের শিশুদের অঙ্কিত ছবিতে বাস্তবতা বুঝায় না তবু মনে হয় ছবির মধ্যে কিছু বাস্তবতা আছে। তাই এই স্তরকে অর্ধবাস্তবতার স্তর বলা হয়।
পাশের চিত্রে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, মোরগটি বাস্তবের সাথে মিল আছে আবার মিলও নেই। মূলত বাস্তবতার সাথে মিল না থাকলেও এটি যে একটি মোরগের চিত্র তা সহজেই বুঝা যায়, একারণে এই স্তরতে অর্ধবাস্তব স্তর বলা হয়।
বয়সের সাথে সাথে শিশুর অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায় বিশেষ করে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্কিমা পরিবর্তনের ফলে চিত্রাঙ্কনের বেশ পারদর্শিতা অর্জন করে। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তবধর্মী চিত্রাংকন খুব একটা প্রযোজ্য নয় তবে সাধারণত ৫ম শ্রেণির শেষ থেকে শুরু হয়। এই সময় বাস্তবধর্মী চিত্রাঙ্কনের জন্য শিক্ষকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষকের সহায়তায় শিশুরা ধীরে ধীরে বাস্তবধর্মী ছবি আঁকতে উৎসাহিত হতে পারে। এ স্তর থেকে শিশুদের অঙ্কনে বাস্তবতার একটা প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। বাস্তবের সাথে খাপ খাইয়ে এ বয়সের শিশুরা তাদের ছবিগুলো এঁকে থাকে।
মতামত দিন