প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও মানদন্ড
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্য
আনন্দময় ও শিশুবান্ধব পরিবেশে ৪+ ও ৫+ বছর বয়সি শিশুদের শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক ও আবেগিক, ভাষা ও যোগাযোগ তথা সার্বিক বিকাশে সহায়তা দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষার অঙ্গনে তাদের স্বতঃস্ফূর্ত অভিষেকের মাধ্যমে জীবনব্যাপী শিখনের ভিত রচনা করা।
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য
- শিশুদের শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক, সামাজিক, আবেগিক এবং ভাষা ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে বিকাশে সহায়তা করা।
- বিদ্যালয়ে সহজ প্রবেশ নিশ্চিত করা।
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম প্রণয়নের মূলনীতি
শিশুর সার্বিক বিকাশে নানানিধ উপাদানের ব্যাপক প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম প্রণয়নের সময় শিশুকে পরিপূর্ণভাবে বুঝে এবং তার বৈশিষ্ট্যসমূহের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব আরোপ করা হয়। রচিত শিক্ষাক্রমের উপর ভিত্তি করেই শিশুর সুপ্ত সম্ভাবনার সার্বিক বিকাশে সহায়তা করার পাশাপাশি তার পরবর্তী জীবনের শিক্ষার জন্য শক্ত ভিত রচিত হয়। নিম্নে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম প্রণয়নের মূলনীতিসমূহ উল্লেখ করা হলো:
১. শিশু কেন্দ্রিকতা,
২. সক্রিয় শিখন,
৩. পরিবারের সম্পৃক্ততা,
৪. স্কুল-সক্রিয় সামাজিক প্রতিষ্ঠান,
৫. একীভূততা,
৬. দেশীয় সংস্কৃতি, কৃষ্টি ও ঐতিহ্যনির্ভর শিখন,
৭. অন্যদের সাথে শিশুর সম্পর্ক,
৮. পারিপার্শ্বিক পরিবেশ,
৯. পরিবেশ বান্ধবতা।
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার নূন্যতম মানদন্ড
১. প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য নির্দিষ্ট শ্রেণিকক্ষ (২৫০ বর্গ ফুট) আছে ও প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষক আছে।
২. প্রাক প্রাথমিকের জন্য নির্দিষ্ট শিক্ষক ১৫ দিনের মৌলিক প্রশিক্ষণসহ বছরে কমপক্ষে ৩ দিনের সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণ পান ও গাইড লাইন অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষ নিরাপদ এবং সুরক্ষিত (বিদ্যালয়ে অনুুশীলন বাড়াতে হবে)।
৩. নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবস্থা বিদ্যমান।
৪. “শ্রেণিকক্ষ ও উপকরণ বিন্যাস, সজ্জা ও ব্যবস্থাপনা” নির্দেশিকা অনুযায়ী শ্রেণিকক্ষটি বিন্যস্ত ও সজ্জিত।
৫. তালিকা অনুযায়ী খেলনা ও স্টেশনারি দ্রব্যাদিসহ সকল শিখন-শেখানো উপকরণ বিদ্যমান।
৬. বিদ্যালয় ক্যাচমেন্ট এলাকার প্রাক-প্রাথমিক বয়সি সকল শিশুকে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
৭. প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণিতে নীট ভর্তির হার ৮০% এর বেশি (৪-৫ বছর বয়সি)।
৮. শিক্ষক শিক্ষার্থীর অনুপাত ১:৩০ (১ জন সহকারী শিক্ষক এবং ১ জন সহায়ক)।
৯. শিক্ষক সহায়িকায় বর্ণিত ক্লাস রুটিন, বার্ষিক পরিকল্পনা ও শিখন-শেখানো পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
১০. বছরব্যাপী মূল্যায়ন ছক নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবহার ও হালনাগাদ করা হয় এবং কোনো পরীক্ষা নেয়া হয় না।
১১. গড় উপস্থিতির হার ৯০% অথবা ঊর্ধ্বে।
১২. বছরে কমপক্ষে ছয়টি অভিভাবক সভা নির্দেশনা অনুযায়ী আয়োজন (১০টি সভা)।
১৩. প্রধান শিক্ষক মাসে দু’বার প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি পরিদর্শন করেন।
১৪. প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি তিন মাসে কমপক্ষে একবার সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার/ উপজেলা শিক্ষা অফিসার/ইন্সট্রাক্টর দ্বারা সুপারভাইজ/তত্ত¡াবধান করা হয়।
১৫. প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি সমাপ্ত করে শতভাগ শিশুই প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়।
মতামত দিন