শিল্পকলা

সংগীতের প্রয়োজনীয়তা ও সংগীত শিক্ষকের করণীয়

সংগীতের প্রয়োজনীয়তা ও সংগীত শিক্ষকের করণীয়

আলোচ্য বিষয়ঃ
  • প্রাথমিক শিক্ষায় কেন সংগীতের প্রয়োজন?
  • সংগীত শিক্ষায় শিক্ষকের করনীয় কী?
  • বাদ্যযন্ত্র কী? বাদ্যযন্ত্রের প্রকারভেদ।
প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে সংগীতের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করুন।
সংগীত বা গান সহজেই শিশু মনকে আকৃষ্ট করতে পারে। মায়ের ঘুম পাড়ানী গান প্রতিটি শিশুকে আকর্ষণ করে। শিশুরা মায়ের কোল থেকে প্রথম বারের মতো প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পা রাখে। এক্ষেত্রে বিদ্যালয়ে যদি শিশুতোষ সংগীতের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে তাদের বিদ্যালয়ের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টিতে সংগীত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

নিম্নে প্রাথমিক স্তরে সংগীতের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা করা হলো:

  • সংগীত চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৌদ্ধিক, কল্পনাশক্তিমূলক এবং প্রকাশমূলক গুণাবলীর বিকাশ ঘটে।
  • সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে সার্বিক মানসিক গুণাবলীর বিকাশে সংগীতের ইতিবাচক অবদান রয়েছে।
  • সংগীত শিক্ষা মানুষকে সৃজনশীল করে তোলে। এই সৃজনশীর মনোভাব জীবনের যে কোন সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক প্রভাব রাখে।
  • সংগীত শিক্ষা বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশেও সহায়ক।
  • সুশৃঙ্খলভাবে আনন্দদায়ক পরিবেশে সকলের সাথে মিলে মিশে সুস্থ বিনোদন চর্চার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো সংগীত চর্চা।
  • শৈল্পিক চেতনা বৃদ্ধি করে এবং জীবনকে সুন্দর করে তোলার আগ্রহ বৃদ্ধি করে।
  • সংগীত চর্চার মাধ্যমে প্রমিত ও শুদ্ধ উচ্চারণ শেখা রপ্ত করা যায়।
  • মানসিক সুস্থতা শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য অত্যাবশ্যক। তাই সুস্থ শরীর গঠনে সংগীতের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
  • ভিন্ন ভিন্ন গানের মূলভাব উপলব্ধির মাধ্যমে শিশুদের সহজেই দেশপ্রেম, প্রকৃতিপ্রেম ইত্যাদির প্রতি সহজেই উদ্বুদ্ধ করা যায় যা তাত্ত্বীক বিষয়গুলোর চেয়ে অধিক ফলপ্রসূ।
  • তাত্ত্বীক আলোচনার একঘেয়েমী দূর করতে সংগীত ‍ও অন্যান্য সৃজনশীল বিষয়গুলোর তাৎপর্য সহজেই অনুমেয়।
  • এছাড়াও দেশীয় সাংস্কতিক চর্চা, মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয়তাবোধ, ইতিহাস, ঐতিহ্য, পরিবেশ ইত্যাদির সাথে আনন্দদায়ক পরিবেশে শিক্ষণীয় বিষয়বস্তু তাদের মধ্যে অনুপ্রবেশ করানো যায়।
সংগীত শিক্ষায় শিক্ষকের করণীয় দিকগুলো বর্ণনা করুন।

সংগীত শিক্ষকের করণীয়:

  • শিক্ষার্থীদের সাথে কুশল বিনিময় করা।
  • গানটির মূলভাব ব্যাখ্যা করা।
  • প্রয়োজন পড়লে শব্দের অর্থ বলে দেওয়া।
  • যথাসম্ভব স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্নভাবে চকবোর্ডে গানটি লিখে অভ্যাস করানো।
  • শুদ্ধ ও প্রমিত উচ্চারণে সঠিক তাল ও ছন্দ বজায় রেখে গানটি আবৃত্তি করে শুনিয়ে দেওয়া।
  • তালের ছন্দ এবং মাত্রা হাত তালি দিয়ে বোঝান।
  • সঠিক সুরে সম্পূর্ণ গানটি একবার গেয়ে শোনান।
  • সঠিক সুর, তাল,ছন্দ বজায় রেখে সমবেতভাবে গান গাওয়ানো।
  • দৈবচয়নের ভিত্তিতে ৪/৫ জনকে ডেকে গানটি গাইতে বলা।
  • কোথাও কোন ত্রুটি থাকলে সেটি ঠিক করে দেওয়া।
  • গান, সুর, ছন্দ, তাল এবং অঙ্গভঙ্গি করে পরিবেশন করা।
  • সবশেষে স্বরলিপি অনুযায়ী হারমোনিয়াম, তবলা ও অন্যান্য বাদ্যযন্দ্রের সাহায্যে গাওয়ানো।
বাদ্যযন্ত্র কাকে বলে?

বাদ্যযন্ত্র  সঙ্গীতোপযোগী শব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্র।  যে যন্ত্রকে বা বস্তুকে আঘাত করলে সুরসহ শব্দ বা আওয়াজ বের হয় তাকে বলে বাদ্যযন্ত্র। এগুলি কণ্ঠসঙ্গীত ও যন্ত্রসঙ্গীতে ব্যবহৃত হয়।

বাদ্যযন্ত্র সাধারণত ৪ প্রকার। যথা:

১) তার বা তত যন্ত্র: সেতার, সরজ, এসরাজ, সুরবাহার, বেহালা, তানপুরা, সারেঙ্গী ইত্যাদি।
২) শুষির বা ফুৎকার যন্ত্র: বাঁশি,সানাই, ক্ল্যারিওনেট ইত্যাদি।
৩) ঘন যন্ত্র: মন্দিরা, করতাল, কাঁসা, জুড়ি, জিপসি ইত্যাদি।
৪) আনদ্ধ যন্ত্র: তবলা বায়া, ঢোল, খোল, মাদল ইত্যাদি।

মতামত দিন

নিউজলেটার

থাকার জন্য আমাদের নিউজলেটার সাবস্ক্রাইব করুন।